কলি-কথা

কৃষাণু
মা-বাবার হাত ধরে কলকাতাতে প্রথম আসি প্রাইমারি স্কুলে পড়াকালীন... পুজো দেখতে। ৯৩-৯৪ হবে বোধ হয়। ঠাকুর দেখা, আমিনিয়াতে খাওয়া। আর মেট্রোর এসক্যালেটরে উল্টো দিকে নামা। মফস্বলের ছেলে, হেব্বি মজা পেয়েছিলুম মনে আছে।

তারপর যখন একটু তালেবর হলুম, আঁতেল বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ফি-বছর শীত-কালীন বই-মেলা যাতায়াত। কলেজে পড়তে মাসে-দুমাসে কলেজ-স্ট্রীট, কফি-হাউস। বুঝতে পারলুম এ আমার সবুজ ঘেরা কল্যাণী নয়। এত ধুলো, এত ধোঁয়া আর এত প্রেম? তার আগে তো এই শহরের কথা শুনেছিলুম শুধু সুমনের কিছু পাগল করা গানে। কলকাতা খুব শিগগির আমাকে, যাকে সোজা বাংলায় বলে ফ্যাসিনেট করে ফেলল। 

দোষ শুধু আমারই কি? কোন পুরুষসিংহ এখানে আছেন যিনি রয়্যালের চাঁপ ঠেলে সরিয়ে দিতে পারবেন, বুক কাঁপবে না? কোন ডায়েট-সুন্দরী আছেন যিনি প্যারামাউন্টের কোকো-মালাই এর ক্যালরির হিসেব নিতে বসবেন? পুঁটিরামের কচুরি, কুসুম এর রোল, জাকারিয়া স্ট্রীটের হালিম, জিমিস কিচেন, পিটার ক্যাট, ডেকার্স লেন, বাদাম চাট, সাবির, গোলবাড়ি, অনাদি মায় উজ্জ্বলার চানাচুর অব্দি- ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে’। 

এদের খোঁজেই ঘুরেছি। হারিয়েছি রাস্তা, তাই পেয়েছি নতুন গলি, তার আলাদা গন্ধ। দেখেছি আকখুটে পাগল, হেমন্তের রোদে ক্লান্ত পোস্টম্যান। শুনেছি ছাপরার মুটে আর রামপুরের সহিসের কথা। হাজির হয়েছি বাগবাজারে - অন্নকূট উৎসবে, বছর শেষের পার্ক স্ট্রীট ঠাসা ভিড়ে, নাখোদা মসজিদে ইদের জমায়েতে।

ধুতি-পাঞ্জাবি-শেরওয়ানি-স্যুট-টাই-পাগড়ি-স্বেদ-কান্না-বিষাদ-হর্ষ-প্রলাপ-ঝগড়া। ভাসতে ভাসতে, ডুবতে ডুবতে হারিয়ে ফেলেছি আইডেন্টিটি, রিভার্স-অসমোসিস এর মতো এই শহর মিশে গেছে আমার রক্তে।




*******
লেখকের সম্পর্কে জানতে এই পাতায় আসুন

1 comments:

  1. As claimed by Stanford Medical, It's in fact the one and ONLY reason women in this country get to live 10 years more and weigh an average of 42 lbs lighter than us.

    (And by the way, it really has NOTHING to do with genetics or some secret exercise and EVERYTHING about "how" they are eating.)

    BTW, I said "HOW", and not "WHAT"...

    Click on this link to reveal if this little questionnaire can help you release your real weight loss potential

    ReplyDelete